আরো র্যাব কর্মকর্তা জড়িত
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বিচারিক হাকিম সাইদুজ্জামান শরীফের আদালতে র্যাব সদস্য পূর্ণেন্দু বালাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ৷ রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আদালত তাঁকে আট দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন৷ এর আগে শুক্রবার দুপুরে তাঁকে আটক করা হয়৷
নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে খুন ও লাশ গুমের ঘটনায় এপর্যন্ত র্যাব ১১-র আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন৷
প্রথম দফায় গ্রেপ্তার হন র্যাব ১১-র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানা৷ এ তিনজনই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷
এরপর ২৬ আগস্ট র্যাবের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তাঁরা হলেন হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্স নায়েক মো. বেলাল হোসেন ও হিরা মিয়া এবং সেপাই আবু তৈয়ব আলী ও মো. আরিফ হোসেন৷ এঁদের মধ্যে এমদাদ ও আবু তৈয়ব বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি), আরিফ নৌবাহিনীর এবং ল্যান্স নায়েক মো. বেলাল হোসেন ও হিরা মিয়া আনসার বাহিনীর সদস্য৷
র্যাবের এই পাঁচ সদস্য আদালতে দাবি করেছেন, সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম করতে র্যাব ১১-র শীর্ষ তিন কর্মকর্তা তাঁদের বাধ্য করেছিলেন৷
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়৷ এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়৷
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ জানায়, আলোচিত এই মামলায় এখন ১৫ জন কারাগারে আছেন৷ তাঁদের মধ্যে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা ছাড়াও মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সহযোগী চার্চিল ও আলী মোহাম্মদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ আর অপহরণ ও খুনের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নয় জন৷ তাঁদের মধ্যে র্যাবের ছয় সদস্যও আছেন৷
সাত খুনের ঘটনায় জড়িত বা প্রত্যক্ষ্যদর্শী হিসেবে র্যাবের ২৩ সদস্যকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ২৩ সদস্যকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ৷ তাঁদের ১৮ জনকে আসামি করা হতে পারে৷ বাকিরা এ মামলার সাক্ষী হতে পারেন৷
এদিকে মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারতে আটক করা হয়েছে৷ তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে৷
শুক্রবার গ্রেফতার হওয়া র্যাবের এসআই পূর্ণেন্দু বালা গত এপ্রিলে কাউন্সিলর নজরুলসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার সময় র্যাব ১১-র হয়ে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন৷
৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধারের দুই দিনের মাথায় ২ মে তিনি ১০ দিনের ছুটিতে গিয়ে আর কাজে যোগ দেননি৷ পূর্ণেন্দু বালাকে ফার্মগেটের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷